পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিরোধী দলের দেয়া তিন বলের শেষ বলে ছক্কা মেরে দিলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে বিরোধী দলগুলি তাকে সামরিক সংস্থার মাধ্যমে তিনটি বিকল্প উপায় পাঠিয়েছেঃ
১) পদত্যাগ করুন
২) অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হন
অথবা
৩) নতুন নির্বাচন ঘোষণা করুন।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বরাবরের ন্যায় মাঠের মতই খুব দক্ষ ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি জানতেন জনসাধারণের মাঝে তার জনপ্রিয়তা বর্তমানে শীর্ষে। তাই তিনি বিরোধী দলের বেঁধে দেওয়া তিন বলের শেষ বলেই ছয় মেরে দেন।
এর আগে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপিত সময় ইমরান খানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।
ইমরান খান বলেন আমি পদত্যাগ করবো না, ইমরান খান স্থানীয় "এআরওয়াই" টিভির সাথে কথা বলার সময় বলেন, যে তিনি যদি রবিবার প্রত্যাশিত অনাস্থা ভোটে জয়ী হন, তবে তিনি একটি নতুন নির্বাচন দিতে পারেন।
তিনি বিরোধী দলগুলির সমালোচনা করে বলেছেন যে, তিনি গত আগস্টে একটি রিপোর্ট পেয়েছিলেন যে, কিছু নেতা ইসলামাবাদে বিদেশী দূতাবাস পরিদর্শন করছেন এবং এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ হোসেন হাক্কানী সাথে দেখা করেছেন এই শরীফ হোসেন হাক্কানী যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ২০১১ সালে হাক্কানী বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন অভিযোগে বলা হয় ২০০৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি "পিপিপি" সরকারের সম্মতিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বেআইনিভাবে ভিসা ইস্যু করে।
ইমরান খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন হোসেন হাক্কানী এর মত লোকেরা লন্ডনের নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দেখা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিরোধী দলগুলি বিদেশি শক্তি সাথে সহযোগিতা করার মাধ্যমে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের শাসন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংসদে রবিবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ডেপুটি স্পিকার তার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।
যার ফলে চেম্বারে হইচই হয়।
অধিবেশন শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইমরান খানের অনুগত ডেপুটি স্পিকার কাছে ঘুসুড়ি বলেন আমি সংবিধান অনুযায়ী এই "অনাস্থা প্রস্তাব কে বাতিল করে দিচ্ছি।"
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি না হওয়া লাগলেও ইমরান খান এর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা যায়।
ন্যাশনাল এসেম্বলি ডেপুটি স্পিকার রবিবার খানের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব কে আইনের পরিপন্থী বলে ঘোষণা দেওয়ার পর বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদে মধ্যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে কোনো আশঙ্কা খবর পাওয়া যায় নি, কেন না সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপিত হওয়ার পূর্ব থেকেই শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা ছিল।
এদিকে ইমরান খান বলেন আমি রাষ্ট্রপতি কাছে অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেয়ার পরামর্শ পাটিয়েছি। আমরা জনসাধারণের কাছে যাব এবং নির্বাচন করব জাতিকে সিদ্ধান্ত নিতে দেবো। ইমরান খান জাতীয় ও রাজ্য আইনসভার কথা উল্লেখ করে টিভিতে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে এবং নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা উচিত।
এদিকে আবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ডক্টর আরিফ আলভী প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভেঙে দেয়ার পরামর্শ অনুমোদন করেছেন তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
পৃথকভাবে তথ্যমন্ত্রী ফারুক হাবিব এক টুইট বার্তায় বলেন যে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে সেনাবাহিনীতে নিরপেক্ষতা প্রকাশ করতে এক বিবৃতিতে বলেন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোন সম্পর্ক নেই।
সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার প্রধান মেজর জেনারেল বাবর ইফতেখার রবিবারের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ততা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন "রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোন সম্পর্ক নেই।"
তবে আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করছি, যেন দেশের অভ্যন্তরীণে কোন বড় ধরনের অপ্রীতিকর করতে না পারে।
No comments