Header Ads

Header ADS

আমি, আব্দুল্লাহ আল মামুন

আমি আমার মত। হতে চাইনা কারু মত। কি হবে? অন্যের সাথে তুলনা করে। আমার স্বক্ষমতার মাঝেই আমার স্বপ্ন।।

"Self-realization is power for oneself"

বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের পুরোনো খেলা এবং রবীন্দ্রনাথের নোংরা কুকীর্তি। যা এখনও অনেক বাংলার কিছু জারজ মানতে পারে না। তাদের জন্য। (দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য)। /// /// ৭ই অক্টোবর ২০১৯ ইং বুয়েটের ভয়নংকর একটি কালো রাত, জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত।

৭ই অক্টোবর ২০১৯ ইং বুয়েটের ভয়নংকর একটি কালো রাত, জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত।




বুয়েটে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নাম্বার কক্ষে ঘুমাচ্ছিলো একটা ছেলে, ছেলেটির নাম ছিল আবরার। একই ব্যাচের সহপাঠী বন্ধু আত্মা যাই বলুন, তানিম সহ তিনজন এসে তাকে ঘুম থেকে জেগে তোলে। হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠাই আবরার কিছু বুঝতে না পাড়ায়, তাদের ভেতরে কিছু কথোপকথন হয়। 

আবরার যখন বলছে ___
__ কি হয়েছে? 
__ বড় ভাইয়েরা তোকে ডাকছে।  
__ কোথায়? 
__ ২০১১ তে আয়। 
__ কেন?
__ গেলেই দেখতে পাবি।
__ কখন যাওয়া লাগবে?
__ এখনই। 
__ তোর ল্যাপটপ এটা? হ্যাঁ. 
     মোবাইলটাও দে।
__ কেন? 
__ দিতে বলছি তাই দিবি, বড় ভাই বলছে।

২০১১ নাম্বার রুমের উদ্দেশ্যে রওনা হল, আবরার সহ আবরারের মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে।

যে ছেলেটাকে তারা এভাবে ঘুম থেকে আচমকাই উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল,  সে সাধারণ ছেলে ছিল না। ২০১৮ সালে বুয়েটের EEE বিভাগে ভর্তি হওয়া এই ছেলের নাম আবরার ফাহাদ রাব্বি। ঢাবি "ক" ইউনিটেও ভর্তি পরীক্ষায় ১৩ তম হয়েছিল। এই অসাধারণ মেধাবী ছেলেটি ঢাকা মেডিকেলেও চান্স পেয়েছিল। 
কলেজের বড় ভাইদের ডাকে ২০১১ নাম্বার রুমের দিকে পা বাড়ানো আবরার তখনও জানত না,  অনন্ত মহাকালের এই যাত্রা অসীম মহাকাশে অন্তে। এটাই তার শেষ যাত্রা। আবরারের জীবনে কাল হয়ে আসে তার ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস। যেখানে আবরার ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়েছে।  একই কক্ষে থাকা রুমমেট সহপাঠী আত্তার বন্ধু মিজান সন্দেহ করেছিল আবরার শিবির করে। তাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আজ এই আয়োজন। কক্ষে ঢোকার পরেই মোবাইল আর ল্যাপটপ চেক করা শুরু করে তারা। তেমন কোনো প্রমাণ না পেয়ে রুমে থাকা রবিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এদিকে আয় চশমা খোল। আবরার চশমা খোলার পর রবিন প্রচন্ড জোরে গালে কয়েকটি চড় মারে। হাত দিয়ে গাল চেপে বসে পড়ে আবরার। এরই মধ্যে মোরশেদ কাঠের তৈরি শক্ত ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে এসে সর্বশক্তিতে মারতে থাকে পিঠে পায়ে পায়ের তালুতে হাতে। প্রচন্ড শক্তিতে মারার কারণে কয়েক বার মারার পর পরেই স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দুই টুকরো হয়ে যায়।  চিৎকার দিতে দিতে কতক্ষণে আবরার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। প্রচন্ড সেই চিৎকার শুনে আশেপাশে রুমের দরজা জানালা ভয়ে বন্ধ হয়ে যায়। এহতেসামুল, রাব্বি ও তানিম আরেকটি নতুন স্ট্যাম্প নিয়ে আসে। এবার অনিক স্ট্যাম্প হাতে তুলে নিয়ে একাধারে আঘাত করতে থাকে, মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে থাকা আবরারের শরীরে।  প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি আঘাত করার পর অনিক নিজেই ক্লান্ত হয়ে যায়।  মেঝেতে পড়ে কাতরাতে থাকে আবরারের শরীর। সঙ্গে সঙ্গে মুজাহিদ ও শামীম কিপিং রোপ (মোটা দড়ি) দিয়ে মারতে শুরু করে, তখন আবরার বাঁচার জন্য আকুতি মিনতি করে, কিন্তু তাতে কারো মন গলেনি। কারো মধ্যেই মনুষ্যত্ব ফিরে আসিনি একটুও। বরং জীবন এগিয়ে এসে অনিকের কাছ থেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে আবরারের শরীরে বিভিন্ন স্থানে সর্বশক্তিতে মারতে থাকে। 

রাত আনুমানিক সাড়ে দশটা। অমানসিক মার খেয়ে মেঝেতে লুটিয়ে গঙ্গাতে থাকে আবরার। ইফতি ধমক দিয়ে টেনে দাঁড় করায়। তারপর সর্বশক্তিতে কয়েকটি চড় মারে। এরপর আবার স্ট্যাম্প দিয়ে পিটাতে থাকে।  

রাত তখন এগারোটা। ২০১১ নাম্বার কক্ষে এসে হাজির হয় আওয়ামী লীগের প্রখ্যাত ক্যাডার এস এম মাহমুদ সেতু,
 
এসেই সবাইকে জিজ্ঞেস করল
__ কি অবস্থা কিছু বাহির হইছে, 
__ না, কোন কিছু বলতেছে না।
__ মারতে থাক।
সেতুর নির্দেশে আবরার কে আবারো ক্রিকেট স্ট্যাম্প কিপিং রোপ দিয়ে মারা শুরু হয়। 
ইফতি ও অনিক আবরাকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে মারতে থাকে। কিল ঘুসি সহ হাতের কোনই দিয়ে পিঠের মাঝখানে বারবার প্রচন্ড আঘাত করতে থাকে। উৎসাহিত হয়ে তখন সবাই মিলে প্রচন্ড শক্তিতে আবরারকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি চর থাপ্পড় লাথি মারতে থাকে। আবরারের কুঁকরে যাওয়া শরীর থেকে তখন শুধু গঙ্গানি আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। 

রাত প্রায় সারে এগারোটা। 
কিছুক্ষণের জন্য রুম থেকে বের হওয়ার আগে অনিক ও রবিন অন্যদের বলে যায়, তোরা ওর কাছ থেকে যেমনেই হোক তথ্য বের কর। এবার মনির ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে আবরাকে পিটাতে শুরু করে। তাবাখখারুল, নাজমুস সাদাত, তানিম,  জেমি আবরারকে চড় থাপ্পর মারতে থাকে। বাইরে থেকে আবার রুমে ঢুকে অনিক হাতে ক্রিকেট স্ট্যাম্প তুলে নেয়। এবার প্রচন্ড জোরে একটানা আরো ৪০ থেকে ৫০ টি আঘাত করে। অসহ্য অবস্থায় মুমূর্ষ আবরার তখন বমি ও প্রসাব করে ফেলে। ব্যথায় চিৎকার করার মতো শক্তিও অবশিষ্ট নেই। 

বাঁচার জন্য ইশারা ইঙ্গিতে কাকুতি মিনতি করছিল। নিশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট দেখে ইফতি আবরারের মাথার নিচে বালিশ দেয়। পরপর আরো কয়েকবার বমি করে আবরার। এমন অবস্থায় আবরার কে হলের বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ধুয়ে মুছে জামা কাপড় বদলানো হয়। 

রাত সাড়ে বারোটা।
ইফতি ও মেহেদির নির্দেশে আবরারকে ধরাধরি করে ২০০৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসে। ইফতি মোশারফ হলের ম্যাচ বয় জাহিদ হাসানকে ডেকে আসে। ২০১১ নম্বর রুমে আবরারের বমি ম্যাচ বয়কে দিয়ে পরিষ্কার করানো হয়। ২০০৫ নম্বর কক্ষে আনার পর ইফতি বলে, তোরা এবার ওর থেকে তথ্য বাহির কর। বুয়েটে কে কে শিবির করে বাহির করে। দুই এক জন আবরারের মূর্ষ অবস্থা দেখে ভয়ে ভয়ে বলল ভাই অবস্থা বেশ খারাপ হাসপাতালে নেওয়া দরকার। এ কথা শোনার পর রবিন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। যা বলছি তাই কর এইগুলি সব নাটক ভং ধরছে। তোরা শিবির চিনস না, শিবির চেনা কষ্ট। রবিনের রেগে ওঠা দেখে সবাই ভয়ে জলদি আবরার কে আবার ইন্টারোগেড শুরু করে। কিন্তু আবরারের মুখ থেকে কোন শব্দ আসে না। নিশ্চল নিস্তেজ পড়ে থাকা দেহ কোন সারা না দেওয়াই ক্ষিপ্ত হয়ে আবার আরেক দফা পিটানো শুরু হয়। 

রাত দুইটা সিদ্ধান্ত হয় আবরার কে হল থেকে বের করে পুলিশে দেওয়া হবে। মেহেদী চকবাজার থানা পুলিশকে ফোন দেয়। হলে একটা শিবির ধরা পড়েছে এসে নিয়ে যান। 
চকবাজার থানা পুলিশ একটা দল পাঠাই শেরে বাংলা হলের গেইটে। কিন্তু পুলিশ আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়। (ততক্ষণে আবরার আর নেই)। তখন আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী বুঝতে পারে আবরার মারা গেছে তাই তারা পুলিশকে গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়। 

রাত আড়াইটা ইফতি মুজাহিদ তাবাখখারুল  ও তোহা মিলে নিশ্চল নিস্তব্ধ আবরারকে তোষকে করে হলের দোতলা সিঁড়িতে এনে রেখে দেয়। সিঁড়ির লাইটের আলোয় আবরারের খালি গায়ে তখন স্পষ্ট  কালো কালো দাগ সারা শরীরে স্ট্যাম্পের বারির কারণে কালসিটে পড়ে আছে। চোখ দুটো বন্ধ তবে চেহারায় কোন যন্ত্রণার ছাপ নেই। বরং সেখানে প্রশান্তির চিহ্ন নিষ্ঠুর অমানুষ কুকুরদের এই পৃথিবী ছেড়ে স্রষ্টার সান্নিধ্যে চলে যাওয়ার প্রশান্তি। 

রাত তখন তিনটে। 
আওয়ামী খুনি বাহিনীরা বুয়েটের চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনে। বুয়েটের চিকিৎসক আবরারের দেহ পরীক্ষা করে ঘোষণা দেন সে মারা গেছে। তড়িঘড়ি করে ক্রিকেট স্ট্যাম্প তোষক বালিশ আবরার ল্যাপটপ চাপাতি হলের ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ এর কক্ষে নিয়ে রেখে দেওয়া হয়। বুয়েটের ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রাসেল আবরারের মৃতদেহ হলের নিচে নামানোর পর তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বুয়েটে চিকিৎসককে চাপ দিতে থাকে। খুনিরা সিদ্ধান্ত নেয় আবরারের লাশ গুম করে ফেলা হবে। কিন্তু ততক্ষণে কিছু শিক্ষার্থী দেখে ফেলায়, তারা নতুন পরিকল্পনা করে আবরারের লাশের সাথে কিছু মাদক দিয়ে গনপিটুনিতে মারা যাওয়ার নাটক সাজানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আবরারের সহপাঠীদের দৃঢ়তায় সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৭ই অক্টোবর ২০১৯ ভোরের আলো ফোটার আগেই বুয়েটে শিক্ষার্থীরা উপহার পায় এক সতেজ তাজা প্রাণ। ৫ ঘন্টা অমানুষিক নির্যাতনের মৃত ফর্সা শরীরটা সবখানে শুধু লাল আর কালো মিশ্রণ। দেশের পক্ষে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস আবরার ফাহাদ রাব্বিকে পৌঁছে দিয়েছে অনন্ত মহাকাশের পথে। 

লেখা: মারুফ হাসান 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
(সংগৃহীত)

এখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে তারা কোন দেশের মায়ের সন্তান। এদেশের মায়ের সন্তান হলে দেশের পক্ষে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এরকম মেধাবী স্বতেজপ্রান কেড়ে নিতে পারে না। তাহলে কি আমরা ধরেই নিতে পারি, তারা কোন এক জাতি, কোন এক গোষ্ঠী, কোন এক দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য এসব করছে। আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই। 
আবরারের ওপরে সারারাত জুরে চলা ভয়নংকর  অমানবিক নির্যাতন- কারণ হচ্ছে আবরার দেশকে ভালোবেসে দেশের স্বার্থে, ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে, কিছু প্রতিবাদ মূলক স্ট্যাটাস লেখায়। আওয়ামী গুন্ডাদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করতে হয়। ঝরে যায়, ঝরে যায় একজন ছাত্র। ঝরে যায় বাংলাদেশের মেধাবী একজন তরুণ। ঝরে যায় বাঙালি জাতি মেধাবী মেরুদন্ড। \

এখন  সিদ্ধান্ত আপনার আপনি কি আবরারের মত নির্যাতিত হয়ে শাহাদত বরন করবেন নাকি প্রতিবাদে জ্বলে উঠবেন। ইন্ডিয়া তথা আওয়ামী দাসত্ব করবেন নাকি বীরের মত বাঁচবেন।আপনি বাংলাদেশ চান  নাকি আওয়ামী গুণ্ডা বাহিনীদের সমর্থনে, ইন্ডিয়াদের এজেন্ডার বাস্তবায়নের মিরজাফর হতে চান। 

আমি মন থেকে ঘৃণা করছি এই আওয়ামী গুন্ডামি রাজনীতি, ও সন্ত্রাসী রাজনীতি, সঙ্গে সঙ্গে বয়কট করছি ইন্ডিয়াকে, বয়কট করছি ইন্ডিয়ার সকল পন্যকে। "বয়কট ইন্ডিয়া"।
#Boycott_india
#Boycott_indian_products

No comments

Theme images by mattjeacock. Powered by Blogger.